খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে কাঁচা বাজারে। মাঠ-ঘাট প্লাবিত হওয়ায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে অসংখ্য ফসলের ক্ষেত। বিশেষ করে সবজি চাষিরা পড়েছেন চরম ক্ষতির মুখে।
লাউ, বেগুন, বরবটি, ঢেঁড়স, কাঁচামরিচ, কচুরলতি, কাঁকরোলসহ নানান মৌসুমি সবজি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। এরই প্রভাব পড়েছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) খুলনার নতুন বাজার, জোড়াকল বাজার, মিস্ত্রীপাড়া বাজার ও শেখপাড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, যেখানে এক সপ্তাহ আগেও ৪০ টাকায় একটি লাউ পাওয়া যেত, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। চালকুমড়া প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকা, বেগুন কেজিতে ১০০-১১০ টাকা, বরবটি ৮০-৯০ টাকা, উচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫৫-৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০-৭০ টাকা, কচুর লতি ও কচুর মুখি ৫০-৬০ টাকা, পটোল ৪০-৫০ টাকা, ঝিঙে ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ — দেশি মরিচের কেজি ১২০ থেকে ১৬০ টাকা।
এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে নাকাল হয়ে পড়েছেন স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষ। নতুন বাজারে বাজার করতে আসা চাকরিজীবী খন্দকার আরিফুল ইসলাম বলেন, “বৃষ্টির আগে ৬০ টাকায় বেগুন কিনেছি, আজ সেটাই ১০০ টাকা। বৃষ্টিকে অজুহাত বানিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে।”
একই বাজারের গৃহিণী নাসিমা বেগম বলেন, “বাজারে ঢুকেই মাথায় হাত। এই দামে সবজি কিনে রান্না করাও কঠিন। দিনমজুর কিংবা সীমিত আয়ের মানুষ কীভাবে চলবে?”
তবে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, এর পেছনে রয়েছে প্রকৃত কারণ। জোড়াকল বাজারের সবজি বিক্রেতা ইব্রাহিম বলেন, “টানা বৃষ্টিতে কৃষকের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। বাজারে ফসল কম আসছে, তাই দাম বাড়ছে। আমরা লাভ করে বিক্রি করছি না।”
আরেক বিক্রেতা নারায়ণ বাবু জানান, “চাষিরা জমিতে ঢুকতেই পারছে না। যেটুকু ফসল ছিল, তাও নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাজারে নতুন সবজি আসছে না। সরবরাহের ঘাটতিই মূল কারণ।”
সব মিলিয়ে খুলনা অঞ্চলের টানা বৃষ্টি শুধু ফসলের ক্ষতিই নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারেও বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। সাধারণ মানুষকে এর বোঝা বইতে হচ্ছে হাড়ে হাড়ে।
টানা বৃষ্টিতে খুলনায় সবজির দাম আকাশছোঁয়া, বিপাকে স্বল্প আয়ের মানুষ
- আপলোড সময় : ২৫-০৭-২০২৫ ১১:৪৫:১১ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৫-০৭-২০২৫ ১১:৪৫:১১ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ